Saturday, 25 May 2019

 সুসান্না আন্না মারিয়া স্মৃতিসৌধ ( সাত সাহেবের বিবির গোর )



আপনি জি টি ধরে চুঁচড়া থেকে চন্দননগর কিনবা চন্দননগর থেকে চুঁচড়ার দিকে গিয়েছেন ? তাহলে খাদিনা মোড় কিনবা তালডাঙ্গা পেরোলেই আপনার চোখে পড়ে থাকবে ওলন্দাজ স্থাপত্য শৈলীর এই প্রাচীন নিদর্শন টি ।।      
ওলন্দাজ রমনী সুসান্না আন্না মারিয়া ১৮০৯ সালে মারা যাওয়ার পর এই স্থানে তাকে কবর দেওয়া হয় এবং এই স্মৃতি সৌধ টি নির্মাণ করা হয় ।। 

                                                               ( সৌধের থামের কারুকার্য )

চুড়া বিশিষ্ঠ পনেরো ফুট উচু এই গম্বুজ টি আজও প্রাচীন ওলন্দাজ স্থাপত্য শিল্পের নিদর্শন হয়ে দাঁড়িয়ে আছে ।। 

                                                        ( সৌধের  কারুকার্য )


স্থানীয় দের কাছে এই গম্বুজ " সাত সাহেবের বিবির গোর " নামে পরিচিত ।। 

< ছবি - সুমন্ত বড়াল > 

Saturday, 18 May 2019

                গুপ্তিপাড়ার রামচন্দ্রের মন্দির 


এই জেলার সীমান্ত জনপদ গুপ্তীপাড়ায় ।।
এই গুপ্তীপাড়ার প্রসিদ্ধ বৃন্দাবনচন্দ্র মঠ।। এই মঠ এর চারটি মন্দিরের মধ্যে রামচন্দ্রের মন্দির শিল্প সমৃদ্ধ কারুকাজের জন্য বিখ্যাতত । রামচন্দ্রের একচূড়া বিশিষ্ট চারচালা মন্দির আয়তন , অঙ্গসজ্জা দিক থেকে এই জেলা তথা এই রাজ্যের মধ্যে চারচালা মন্দির শৈলীর এক দৃষ্টান্ত স্বরূপ ।   শেওড়াফুলির রাজা হরিশচন্দ্র রায় অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষ ভাগে রামচন্দ্রের মন্দিরটি নির্মাণ করেন। 
রামচন্দ্রের মন্দির ‘চারচালা’ রীতিতে নির্মিত হলেও এই মন্দিরের ছাদের মধ্যভাগে আটকোণা মন্দিরের একটি ক্ষুদ্রাকৃতি অনুকৃতি বর্তমান ।। 
                                                            ( রামচন্দ্র মন্দিরের প্রবেশ পথ )


মন্দিরের প্রবেশ পথে দুটি স্বতন্ত্র স্তম্ভ এবং পাশের দেওয়ালের সাথে যুক্ত দুটি অরধস্তম্ভ দেখা যায় ।। স্তম্ভ গুলি এবং মন্দিরের দেওয়াল পোড়ামাটির কাজে অলংকৃত ।। এই টেরাকোটার কাজ গুলিতে রাম রাবণের যুদ্ধ , রাস মন্ডল , ততকালীন সমাজ চিত্র সবই ফুটে উঠেছে । 

( টেরাকোটার কাজে রাম রাবণের যুদ্ধ )





                                                    
                                                      ( টেরাকোটার কাজে রাসমণ্ডল )



এই মন্দির নির্মাণ রীতি এই মন্দির টিকে স্থাপত্য শৈলীর দিক থেকে বিশেষ অকরষণীয় করে তুলেছে । এই মন্দিরে শিল্পসুষমার যে গাম্ভীর্য তা সহজের দর্শক কে মুগ্ধ করে ।। 

হাওড়া থেকে কাটোয়া লাইনে বেহুলা স্টেশনে নেমে টোটোতে খুব সহজেই পৌছে যাওয়া যায় এই মন্দিরে । আর সড়ক পথে আসাম রোড < stkk road > ধরে সোজা জিরাট , বলাগড় ছাড়িয়ে বেহুলা নদীর ব্রিজ পেরিয়ে কিছুটা গিয়ে বাদিকে সোজা ।। ও হ্যাঁ বেহুলা ব্রিজ পেরিয়ে , আসাম রোডের পাশে বেহুলা খেলার মাঠ লাগোয়া " বিপদ মণ্ডল " এর চায়ের দোকানে চা এ চুমুক টা দিয়ে দেবেন ।। কথা দিচ্ছি চা , চাওয়ালা এবং দোকান তিনটি দারুণ লাগবে ।। 
< ছবি - সুমন্ত বড়াল > 

Thursday, 16 May 2019

  " নন্দদুলালজীউর মন্দির "  


 
 " নন্দদুলালজীউর মন্দির " 

বাঙালীর সনাতন বাসগৃহ খড়েড় ছাওয়া দোচালার অবিকল প্রতিরুপ এই জেলার বিখ্যাত শহর চন্দন নগর এর ইন্দ্রনারায়ন চৌধুরী প্রতিষ্ঠিত " নন্দদুলালজীউর মন্দির " 
১১৪৬বঙ্গাব্দ ( ১৭৩৯ খ্রী ) এ ফরাসী গভর্নমেন্ট এর  দেওয়ান ইন্দ্রনারায়ন চৌধুরী এই মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন ।। একান্ন ফুট লম্বা এই মন্দির বর্তমানে সংস্কার করা হয়েছে ।এই মন্দির টি টেরাকোটার কাজে সুসজ্জিত ছিল , কিন্তু মন্দির সংস্কার এর সময় সেই সব কাজের বেশীর ভাগ টাই নোনা ধরে নষ্ট হয়ে যাওয়ার কারণে কাজ গুলি ফেলে দেওয়া হয়। 

                                                                     মন্দিরের প্রবেশ পথ 

বর্তমানে মন্দিরের প্রবেশ পথে দুটি বড়  ও চব্বিশ টি ছোট টেরাকোটার কাজের পদ্ম লক্ষ্য করা যায় । একথা স্বীকার করতেই হয় সংস্কার করতে গিয়ে এই মন্দিরের সৌন্দর্যয় অনেক অংশে নষ্ট হয়েছে । তবু একথাও ঠিক যে  নন্দদুলাল মন্দির এর মত এক বাঙলা মন্দির  পশ্চিমবাংলায় বিশেষ নেই ।। ব্যাস্ত শহরের ছবিঘর মোড়েরকাছেই এই মন্দির এই শহরের বিশেষ আকর্ষণ ।।      


                                                           মন্দিরের গায়ে টেরাকোটার পদ্ম  


হাওড়া বর্ধমান মেন লাইনে চন্দননগর ষ্টেশন এ নেমে অটো বা টোটো তে ছবিঘর মোড় নেমে মিনিট কয়েকের হাঁটা আর সড়ক পথে চন্দননগরের ছবি ঘর মোড়ে এলেই দেখতে পাওয়া যাবে এই মন্দির ।। 

< ছবি- সুমন্ত বড়াল > 
 
হুগলী দর্শন

Sunday, 12 May 2019

                               কুন্তীঘাটের ঝুলন্ত সেতু                                    


                                                        
                                                         ( কুন্তি নদীর উপর ঝুলন্ত সেতু )

ত্রয়োদশ শতাব্দী সপ্তগ্রামের শাসনকর্তা জাফর খান গাজি এই জেলার ত্রিবেণী থেকে বর্ধমানের কালনা পর্যন্ত যাতায়াতের জন্য সড়ক নির্মাণ করেছিলেন। পরবর্তী কালে ডাচ শাসন কালে মানুষের সুবিধার জন্য হুগলির জেলা জজ ড্যানিয়েল স্মিথের চেষ্টায় কুন্তী নদীর উপর এই সেতুটি নির্মিত হয়। সেতুটি তৈরি করতে অর্থ সাহায্য করেছিলেন ভাস্তারার জমিদার ছকুরাম সিংহ। জেলার কুন্তীঘাট ও ঘোষালিয়া গ্রামের মাঝে কুন্তী নদীর ওপর এই ঝুলন্ত কাঠের ব্রীজ টি অবস্থিত । কাঠের তৈরি এই সেতুটি বেশ নয়নাভিরাম ।। বহু ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে আজও দাঁড়িয়ে আছে সেতু টি ।। প্রাচীন এই সেতু টি বর্তমানেও বেশ ব্যাস্ত ।। তবে খুব ভারী যানবাহন এই সেতুর উপরদিয়ে চলাচল করেনা ।। 
শতাব্দী প্রাচীন এই পুল টি বর্তমানে রাজ্য সরকারের সহায়তায় মেরামতি ও রক্ষানাবেক্ষণের মধ্যেদিয়ে তার পুরানো শ্রী ফিরে পাচ্ছে ।। 
                                                             
                                                                    ( বিকেল এর কুন্তী সেতু )

হাওড়া কাটোয়া লাইনে , কুন্তিঘাট স্টেশন এ নেমে হাটা পথে পৌঁছে যাওয়া যায় এই সেতুতে ।। বিকেলের আলোয়  কিংবা বৃষ্টি ভেজা কোন দিনে গ্রাম্য পরিবেশে কুন্তিনদীর উপর এই সেতু বড় মনোরম ।।   


                                                                   ( বৃষ্টি দিনে কুন্তী সেতু )

<ছবি - সুমন্ত বড়াল > 

Thursday, 9 May 2019

                                                            "  সোমড়া হর সুন্দরী মন্দির "                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                   

                                                                       ( হর সুন্দরী মন্দির )

এই জেলার গঙ্গা তীরে সোমড়া আর বলাগড়ের মাঝে প্রসিদ্ধ গ্রাম সুখড়িয়া । উলার মুস্তাফি বংশের একটি শাখা এই গ্রামে আজও বসবাস করে ।। মন্দির ঘেরা এই জনপদ ইতিহাসের গন্ধ মাখা ।। এই জনপদের মেঠো রাস্তার গলি ধরে গেলে চোখে পড়ে বহু প্রাচীন মন্দির ।। প্রাচীন বাংলায় মন্দির শৈলীর বহু নিদর্শন এই জনপদে পাওয়া যায় ।। 
যেমন " হর সুন্দরী মন্দির " প্রাচীন রত্নমন্দির শৈলীর নিদর্শন । ১৮১৪ সালে দেওয়ান রামনিধি মিত্র মুস্তাফি এই মন্দির নির্মাণ করেন । রত্নমন্দির হলেও এই মন্দির এর গঠন শৈলী বেশ কিছুটা অন্যরকম ।। 



হাওড়া কাটোয়া লাইনে সোমড়া ষ্টেশন এ নেমে টোটো তে সুখড়িয়া ।। তবে স্টেশন থেকে পায়ে হেটেও মন্দিরে আসতে পারেন ।। ছোট্ট গ্রাম এর মধ্যে দিয়ে আসতে আসতে চোখে পড়বে আরও অনেক গুলি দর্শনীয় স্থান ।। আর সড়ক পথে আসতে চাইলে মগরা থেকে আসাম রোড ধরে সোজা সবুজ দ্বীপ মোড় সেখান থেকে সবুজ দ্বীপের দিকে সুখোড়িয়া //
< ছবি -সুমন্ত বড়াল >
https://www.facebook.com/hooghlydorshon
... হুগলী দর্শন ...

Tuesday, 7 May 2019

                                                       " পিয়াসারার  সরকার বাড়ি "                                                                  


         " কত শত ইতিহাসের গল্প লেখা থামের গায়ে " 
 

জেলার এক প্রাচীন পল্লী পিয়াসারা ।। হাওড়া - গোঘাট ট্রেন লাইনে লোকনাথ স্টেশন থেকে প্রায় ৭ কি।মি ভিতরের একটি গ্রাম ।। 
সেই পিয়াসারার ৪০০ বছরের পুরানো সরকার বাড়ি ।। কালের নিয়মে ক্ষয় হতে হতে আজ ভগ্নপ্রায় দশা ।। তবে আজ এই বাড়িতে সমারোহের সাথে দুর্গাপূজা হয় ।। 
এই বাড়ির সদস্য শ্রী সুদীপ সরকারের সাথে কথা বলতে বলতে আমরা জানতে পারলাম নানা ইতিহাস ।। এই বংশের আরো দুটি জমিদার বাড়ি রয়েছে পাশেই ।। সে ছবিও আমরা দেখাবো ।। কিন্তু বর্তমানে এই বাড়ির অবস্থা বেশ খারাপ ।। এই সকল বাড়ি গুলি হেরিটেজের মর্যাদা না পেলে হয়ত হারিয়ে যাবে ।।

আসুন আমরা চেষ্টা করি যদি আমাদের জেলার এই প্রাচীন ঐতিহ্য গুলির জন্য কিছু করা যায় ।। আর যারা প্রাচীন বাড়ি দেখার ব্যাপারে আগ্রহী তারা দেরী করবেন না দেখে আসুন ।।
< ছবি ও তথ্য - সুমন্ত বড়াল >
বিশেষ ধন্যবাদ শ্রী সুদীপ সরকার ও শেখ কাম্রুদ্দিন কে ।।
https://www.facebook.com/hooghlydorshon

                         পাকড়ী গ্রামের বহু শতক পুরানো "সিদ্ধেশ্বরী মাতার মন্দির



পাকড়ী গ্রামের বহু শতক পুরানোজেলার মগরা থানার অন্তর্গত প্রাচীনতম গ্ৰামগুলির মধ্যে দিগসুই অন্যতম ।। দিগসুই গ্রাম পেরিয়ে কয়েক কিলোমিটার গেলেই ছোট্ট গ্রাম পাকড়ী ।। 
পাকড়ী গ্রামের বহু শতক পুরানো "সিদ্ধেশ্বরী মাতার মন্দির। গাছগাছালি , বাগান আর দিঘি ঘেরা এই মন্দিরে গিয়ে কিছুক্ষণ কাটালে মন ভরে যায় ।। 
তবে এই মন্দির সম্বন্ধে কোন রকম তথ্য পাওয়া যাইনি । তবে পথচলতি মানুষ এই থানের পাশ দিয়ে যেতে গিয়ে দাঁড়িয়ে প্রণাম করতে ভোলেন না ।। সকলের বিশ্বাস সিদ্ধেশ্বরী মাতা খুব জাগ্রত । আর বিশ্বাস টাই যে মূল কথা ।। 

পথনির্দেশে জানিয়ে দি । হাওড়া বর্ধমান মেন লাইনে তেলান্ডু স্টেশনে নেমে গাড়িতে দিগসুই , দিগসুই থেকে কিছুক্ষণ এর রাস্তা পাকড়ী  ।।
< ছবি ও তথ্য - সুমন্ত বড়াল >
https://www.facebook.com/hooghlydorshon
। 

Thursday, 2 May 2019

                                                             প্রসাদপুর এর লক্ষ্মীজনার্দন মন্দির   






হুগলী জেলার আনাচে কানাচে রয়েছে বহু প্রাচীন ঐতিহ্য পূর্ণ নিদর্শন ।। 
জেলার জাঙ্গিপাড়া ব্লকের অন্তর্গত ছোট্ট গ্রাম প্রসাদপুর ।। এই গ্রামের প্রাচীন লক্ষ্মীজনার্দন মন্দির ।। 
পাঁচ শিখর বিশিষ্ঠ এই মন্দির আজ ভগ্ন প্রায় অবস্থায় পড়ে রয়েছে ।। তবে আজও এই মন্দিরে শালগ্রাম শিলা ও ছবিতে নিত্যপুজা হয় ।। মন্দিরের গায়ে আজও কিছু কাজ লক্ষ্য করা যায় ।।  
মন্দিরে পৌছাতে হলে - হাওড়া - তারকেশ্বর শাখার ট্রেনে  হরিপাল ষ্টেশন এ নেমে  জগতবল্লভপুর এর বাসে প্রসাদপুর ।।

ভক্তের সাথে পথেই বিরাজ করেন " পথের মা "

             ভক্তের সাথে পথেই বিরাজ করেন " পথের মা " গুগুল ম্যাপ পিচ রাস্তা থেকে ঢালাই রাস্তা পেরিয়ে বাড়ির উঠান দিয়ে যে মোড়ে নিয়ে ...